খোয়াব- ভাবনার ভাষা সময়ের গদ্য

খোয়াব- ভাবনার ভাষা সময়ের গদ্য
সম্পূর্ণ গদ্যনির্ভর সাহিত্য পত্রিকা

Saturday, September 11, 2010

আমার খোয়াব

আমি অনেকদিন ধরে ভাবছিলাম এই পোস্টটি দেওয়ার কথা, হয়ে উঠছিল না। সম্প্রতি কফিহাউসের আড্ডায় এক বছর পূর্তি হওয়া উপলক্ষ্যে একটি পোস্ট লিখতে লিখতে অনেক পুরনো কথা মনে পড়ছিল। সেইসব স্মৃতি অপূর্ন থেকে যাবে যদি খোয়াবের কথা না বলি। খোয়াবের কাছে আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। আজকে সেই কথাই বলব ঠিক করেছি এই পোস্টে।

অনেকদিন ইংরাজীতে ব্লগিং করে একটা সময় কেমন উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছিলাম। ২০০৯ সালের মে জুন মাসের কথা। তখন আমার এক বন্ধুর কাছ থেকে জানতে পারি বাংলা ভাষায় ওয়েব ম্যাগাজিনের কথা। আমার কোন ধারনাই ছিল না এই বিষয়ে। প্রথমেই জানতে পারি সোনাঝুরি আর উড়ালপুলের কথা। জানতে পারি ইউনিকোড সম্পর্কে। এর আগে মাঝে মধ্যে বাংলাওয়ার্ডে বাংলায় লেখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু সেখানে দুটো সমস্যা ছিল - এক তো কিবোর্ডের একটা ম্যাপিং মাথায় রাখতে হত, আর দ্বিতীয়তঃ বাংলাওয়ার্ড সিস্টেমে না থাকলে অন্য কোন এডিটরে ফাইল খুলতে অসুবিধে হত। যাইহোক, সেদিক থেকে ইউনিকোডে কপি পেস্ট করা যাবে জেনে বড় উৎসাহ পেলাম। খুলে ফেললাম একটা বাংলা ব্লগ। এই সময়েও আমি অভ্র কিবোর্ডের ব্যবহার জানি না। বিভিন্ন সাইট থেকে ইউনিকোড বাংলা লিখতাম।

তখন বাংলা ব্লগ ডায়রেক্টরি থেকে অন্যান্য বাংলা ব্লগ পড়তে পড়তে একটি অসাধারন কবিতার ব্লগ খুঁজে পেলাম। অদ্ভুত ভালো লেগে গেল। ব্লগটি থেকে আমি লেখকের পরিচিতি পড়ে কেমন করে জানি না মাল্যবানদার অর্কুট প্রোফাইলে পৌঁছে গেলাম। উনিও আমাকে বন্ধু করে নিলেন। তখন মাল্যবানদা জোর কদমে খোয়াবের জন্য কাজ চালাচ্ছেন। আমি ভয়ে ভয়ে বললাম, আমি কবিতা লিখি, আমার একটা কবিতা নেবেন? মাল্যবানদা বললেন, খোয়াবে তো কবিতার পাতা থাকছে না। তুমি বরং একটা গদ্য লেখ। গল্প লিখতে না পার, অনুগল্প চেষ্টা কর।
আমি মুখে বললাম, আচ্ছা বেশ। কিন্তু মনে মনে ঠিক বুঝেছি এ আমার কর্ম নয়।

একদিন বেড়াতে বেরিয়ে একটা খাতা কিনে বাড়ি ফিরলাম। ঠিক করলাম এবার শুরু করা যাক। কিছু লিখেও ফেললাম। বলাই বাহুল্য এখন বুঝতে পারি সে লেখা পাতে দেওয়ার মত নয়। কিন্তু যে সদ্য সদ্য গল্প লেখা শুরু করেছে তার পক্ষে তখন সেই লেখাই অনেক। আমার এরকম দুটি লেখা সেদিন ফিরে এসেছিল সম্পাদকের কাছ থেকে। কিন্তু এই প্রত্যাখানে দমে যাই নি। বিদেশে আসার পরে রোমান বাথ বেড়াতে যাওয়ার ঘটনা লিখে পাঠিয়ে দিই আবার। খোয়াবের প্রথম সংখ্যা যারা পড়েছেন, তাঁরা হয়তো লেখাটি দেখে থাকবেন। আজ মুক্তকন্ঠে স্বীকার করি সেদিন ঐ দুটি লেখা ফেরত না এলে আমার কোনদিন গদ্য লেখাই হত না। খোয়াবের হাত ধরে এভাবেই আমার গদ্য লেখা শুরু। 

তৃতীয় সংখ্যার কথা বলব আরেকদিন।